ভূয়া দলিল করে গাজীপুরের রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্টের মালিকানা দাবী ও রিসোর্ট দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রিসোর্ট এর কিছু অংশ দখল করে অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ আইসিএলের শফিকুর রহমানের নামে। একাধিকবার শফিকুরের নামে থানায় ও গাজীপুর আদালতে অভিযোগ ও মামলা দায়ের করা হলেও তার দখলদারিত্ব থেকে উদ্ধার করা যাচ্ছেনা রিসোর্টটি। প্রশাসনের সু-হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন রিসোর্টটির বর্তমান মালিক।
রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে তার যাত্রা শুরু করে ২০১২ সালে। রিসোর্টটি যৌথ মালিকানার প্রতিষ্ঠান। যা ঐ সময় প্লট আকারে বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করা হয়। এবং রিসোর্টটি সর্বপ্রথম পরিচালনা করে ইয়েস মাল্টিপারপাস কোঃ অপাঃ সোসাইটি লিঃ তথা ইয়েস গ্রুপ নামের প্রতিষ্ঠান। পরবর্তিতে প্রতিষ্ঠানের হিসাব নিকাশ এবং পরিচালনা সমস্যা দেখা দিলে- সকল ভবন ও প্লট মালিকগন নিজ দ্বায়িত্ব গ্রহণ করে। এবং ইয়েস গ্রুপকে দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করে । প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান মালিক এবং ভাড়ায় চালিত ভবনগুলো হচ্ছে রিসিপশন ভবন, মাঠ হাউস, কটেজ – ৩, কটেজ- ৪, কটেজ- ৫, কটেজ -৬ এবং কটেজ- ৯। কটেজ- ৭ এবং কটেজ -৮ রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিঃ এর ভাড়ায় চুক্তিকৃত।
এছাড়া আরও ১০ কাঠার ১০টি অভ্যন্তরিন প্লট অন্যান্য মালিকগন বিক্রি করে রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিঃ এর নিকট। যার আইনত মালিক রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিঃ।
ইয়েস মাল্টিপারপাস থেকে মেক্সিম গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ১০ কাঠার একটি প্লট ক্রয় করে, যার প্লটের নম্বর ১১ -যা ইয়েসের মাস্টার প্লান অনুযায়ী নির্ধারিত ছিল । পরবর্তিতে মাক্সিম গ্রুপ ঐ প্লটটি বিক্রয় করে দেয় সাহেদুল হক এর নিকট । ঐ প্লটটির দলিলে চৌহদ্দী না থাকার সুযোগ নিয়ে জাল দলিল তৈরি করে সাহেদুল হক ফাঁকা প্লট এর জায়গা বাদ দিয়ে অন্যান্য মালিকদের তৈরীকৃত রিসোর্টের সকল কটেজের কমন স্পেস ক্যাফেটেরিয়া ভবনটির ভুয়া চৌহদ্দী ও দলিল তৈরি করে মালিকানা দাবি করে এবং বিভিন্ন সময় ওই জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা হামলা করে এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিদের মারধর এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানায় অভিযোগ দ্বায়ের করা হয়। মামলা নংঃ ২১/৩১, তারিখঃ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইং।
এ ব্যাপারে মেক্সিম গ্রুপকে জানালে তিনি সাহেদুল হককে খালি প্লট বিক্রি করেছেন যার মধ্যে কোন প্রকার স্থাপনা ছিল না এবং চৌহদ্দী উল্লেখ করেন নাই বলে ৩০০ টাকা মুল্যের স্ট্যাম্পে লিখিত স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
একইভাবে, সাহেদুল হক মেক্সিম গ্রুপের কাছ থেকে আরো ২০ কাঠার একটি খালি প্লট ক্রয় করে ভুয়া চৌহদ্দী উল্লেখপূর্বক একই কায়দায় রিসোর্টের ওয়াটার ফ্রন্ট এর রিসিপশন বিল্ডিং এবং ভূয়া চুক্তিপত্র তৈরি করে তিনটি ব্যাক্তি মালিকানা ভবন এবং রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিঃ এর মালিকানার তিনটি ভবন ভাড়া হিসেবে দেখিয়ে দখলের জন্য হামলা এবং প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রাখে।
এব্যাপারে গাজীপুর আদালতে একটি মামলা দ্বায়ের করা হয়। যাহার নং- সি আর মামলাঃ নং ৫০৫/২০২৩ মামলার তারিখঃ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩। পরবর্তিতে আদালত হতে তদন্তভার পিবিআইকে দেয়া হলে ভাড়া চুক্তিটি ভুয়া উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।
কটেজ-০৪ এর মালিক চন্দন প্রসাদ সাহা সেই ভাড়া চুক্তির সম্পাদনের একবছর পূর্বে কানাডায় মৃত্যু বরণ করলেও চুক্তিপত্রে তার স্বাক্ষর জাল করে চুক্তিনামা সম্পন্ন করে। যা পিবিআই এর তদন্তে উল্লেখ আছে।
সাহেদুল হক এর পরিচয় এবং ব্যবসায়িক পরিচয়ঃ সাহেদুল হক, পিতাঃ এইচ এন এম শফিকুর রহমান, সাং ধনিহজরা, থানাঃ চৌদ্দগ্রাম, জেলাঃ কুমিল্লা । সাহেদুল হক এর পিতাঃ এইচ এন এম শফিকুর রহমান আইডিয়াল কোঃ অপারেটিভ সোসাইটি নামে একটি এম এল এম প্রতিষ্ঠান তৈরি করে বাংলাদেশের মানুষের প্রায় অনুমানিক ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করে , যে মামলা এইচ এন এম শফিকুর রহমান এবং তার স্ত্রী আদালতের ধারা দন্ডিত এবং দেওলিয়া ঘোষিত হয় , আদালত তার নামে বাংলাদেশে সম্পত্তি ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা দায়ের করে । বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে এই প্রতারক পরিবারে বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট রয়েছে। সে ফেরারী আসামী।
* তাদের বিভিন্ন অপরাধ, অপকর্ম এবং জাল জালিয়াতির ধারাবাহিক বর্ণনাঃ
১) রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট এর দুইটি পার্ট-একটি কটেজ পার্ক বলে আমরা পরিচালিত করি এবং দ্বিতীয়টি ওয়াটার ফ্রন্ট পার্ট যেটা দ্বিতীয় পার্ট তারা জাল এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে দখল করে আছে ।
২) শফিকুল ইসলাম আই সি এল কো-অপারেটিভ এর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে মিনিমাম দুইশত মামলার ওয়ারেন্ট এবং সাজাভুক্ত মোস্ট ওয়ান্টেড পলাতক আসামি।
৩) সে এবং তার গ্রুপ একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামের সক্রিয় ক্যাডার বাহিনী এবং সদস্য। যারা নিয়মিত বাংলাদেশ সরকার (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ) এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
৪ ) স্থানীয় ছাত্র শিবির ক্যাডার আজিজুল হক শিমুল, পিতাঃ হানিফা, সাং পাঁটপচা, থানা- জয়দেবপুর, জেলাঃ গাজীপুর এবং কথিত ভুয়া সাংবাদিক ছাত্র শিবিরের জঙ্গি শাখার পলাতক আসামী আখতার হোসেন সাদ্দাম, পিতাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাং- জগমোহনপুর, থানাঃ চৌদ্দগ্রাম, জেলাঃ কুমিল্লা এর নেতৃত্বে জামাতে ইসলামের সক্রিয় কিছু ক্যাডার ছদ্মবেশে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে তাদের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত করে যাদেরকে মাসের ভিত্তিতে থাকা প্রদান করা হয়,
৫) রিসোর্ট এর ওয়াটার ফ্রন্ট পার্ট কে তাদের আত্মগোপনের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত করছে এবং তার সকল অপরাধ মূলক অপকর্মের অফিস হিসাবে এখান থেকে পরিচালিত করে থাকে।
৬)রিসোর্টের অভ্যন্তরে এবং বাহিরে রিসোর্টের বিভিন্ন ডিরেক্টরদের মালিকানা সম্পত্তিগুলি এবং কোম্পানির কমন সম্পত্তিগুলিকে জাল দলিল তৈরি করে করে বিভিন্নভাবে বিক্রির প্রক্রিয়া করে।
৭) রিসোর্ট তার কাছে ভাড়া দিয়েছি বলে জাল এগ্রিমেন্ট তৈরি করে করে সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা করে রিসোর্টের একাংশ সে দখল করে অতঃপর আদালতে মামলা করলে তা পিবিআই তদন্ত রিপোর্ট হয় যে রিপোর্টে তার চুক্তি জাল হিসেবে প্রমাণিত হয়ে তার এবং তার ক্যাডারদের নামে আদালত গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট জারি করে।
৮) নিয়মিত গাজীপুরে বন বিভাগের অধীনস্ত গাজীপুরের ভাওয়াল বনে সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা বনের গাছ কেটে চুরি করে বিক্রি করে, বন দখল করে স্থাপনা তৈরি করে । এব্যাপারে বন বিভাগ থেকেও তার নামে একাধিক মামলা চলমান আছে।
৯) ওয়াটার ফ্রন্ট এর বিল্ডিং মালিকদের বিল্ডিং হতে আনুমানিক ১০ লক্ষ টাকা করে ছয় বিল্ডিংয়ের মোট ৬০ লক্ষ টাকার মালামাল চুরি করে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাত করে।
১০) ক্যাফেটেরিয়া থেকে প্রায় এক হাজার লোকের পিকনিক করার মতো আনুমানিক ৮৫ লক্ষ টাকার মতো মালামাল কিছুদিন আগে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা করে ডাকাতি করেছে যার কারণে আদালতে মামলা করলে সেই মামলাও চলমান আছে।
১১) গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ১২টার সময়ে শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী, ক্যাডার বাহিনী নিয়ে রিসোর্টের কটেজ পার্কের অংশে অস্ত্রসহ হামলা করে প্রায় ১০ জন স্টাফকে আহত করে এবং দুইটি জেনারেটর সহ স্টোর হতে আনুমানিক ৭০ লক্ষ টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায় । তারপর আবারও আদালতে মামলা করা হয় এবং সেই মামলায় প্রধান আসামি শফিকুল ইসলাম সহ তার ক্যাডার বাহিনীর পাঁচজনকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
১২) পরবর্তী সময়ে আসামীদ্বয় সুকৌশলে জামিনে মুক্ত হয়ে রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্টের স্টাফদের উপর প্রাণনাশের হুমকি প্রদান পূর্বক একজন রিসোর্টের কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের মালামাল ক্রয় করতে যাওয়ার সময় রাস্তায় কুপিয়ে জখম করে প্রাণনাশের চেষ্টা চালায় এবং টাকা পয়সা লুটপাট করে পালিয়ে যায়।
সন্ত্রাসী বাহিনীঃ শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক জমিদখল, সন্ত্রাসী বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে । বর্তমানে সে রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিঃ দখল করার জন্য স্থানীয় এক সন্ত্রাসী গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানাধীন পাঁটপচা এলাকার হানিফার ছেলে আজিজুর রহমান শিমুলের সাথে যোগসাজসে করে এক সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন জগমোহনপুর এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলাম এর ছেলে আক্তার হোসেন সাদ্দাম,একই এলাকার মীর হোসেন সহ অজ্ঞাতনামা প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী যাদের মধ্যে আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ জন সন্ত্রাসীদের নিয়ে সে প্রায় সময় রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিঃ এর ওয়াটার কটেজ এরিয়ায় আত্মগোপন করে ।
ইকো রিসোর্টের বর্তমান মালিক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে, এই জালিয়াত এবং সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে সনামধন্য প্রতিষ্ঠান রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিঃ কে সন্ত্রাসী ও জালিয়াত মুক্ত করে সুষ্ঠ সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়ে সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতার দাবী জানান।
Leave a Reply