মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাতের কারণে শনিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের মংডু শহর।
হ্নীলার বাসিন্দা আহম্মদ কবির জানান, থেমে থেমে গোলার শব্দ শোনা গেছে। গোলাগুলির আওয়াজ শুনলে একটু ভয় তো লাগেই। তবে এখন এসব মানুষের কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, অনেক দিন মানুষ লবণের মাঠে কাজ করতে যায়নি, নাফ নদীতে মাছ শিকারে যায়নি। এখন সবকিছু মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তবে গোলাগুলির শব্দ বেশি হলে একটু আতঙ্ক তৈরি হয়।
টেকনাফের চারটি ইউনিয়ন হোয়াইক্যং, হ্নীলা, টেকনাফ সদর ও সাবরাং এবং উখিয়ার পালংখালী এলাকার বিপরীতে নাফ নদীর ওপারে প্রায় শত কিলোমিটারজুড়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। দেশটির মংডু শহরের পশ্চিমে নাফ নদী, পেছনে কালাদান পাহাড়। উত্তরে কুমিরখালি, নাইচাডং, কোয়াচিদং, শিলখালী, বলিবাজার, কেয়ারিপ্রাং, পেরাংপ্রু গ্রাম। গত কয়েকদিন ধরে মূলত এসব এলাকায় সংঘাত চলছে।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, মংডুর রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপেও সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির তুমুল সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এপারে গুলির শব্দ ভেসে আসছে। তবে লোকজনের মাঝে তেমন আতঙ্ক নেই। আমরা সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে সংঘাত চলছে। মাঝে মধ্যে এপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে আতঙ্ক খুব একটা নেই। তবুও আমরা সীমান্ত এলাকার লোকজনকে নিরাপদ দূরত্বে সতর্ক অবস্থায় থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত বর্তমানে শান্ত রয়েছে বলে জানান ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ। তিনি বলেন, বর্তমানে যেখানে সংঘাত চলছে সেখান থেকে ঘুমধুমের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। এ কারণে এখানে কোনো আতঙ্ক নেই। সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্তে বিজিবির কড়া নজরদারি রয়েছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
Leave a Reply