1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০১ পূর্বাহ্ন

পাকিস্তানে পদত্যাগ করা সেই নির্বাচন কমিশনারের উল্টো ডিগবাজি

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১১০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

নির্বাচনে কারচুপি সংক্রান্ত সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির সাবেক নির্বাচন কমিশনার লিয়াকত আলী চাথা বলেছেন, এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত লজ্জিত এবং বিব্রত। একই সঙ্গে কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাদের সাথে সমন্বয় করে তিনি নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছিলেন বলে দাবি করেছেন।

এর আগে, গত শনিবার রাওয়ালপিন্ডির এই নির্বাচন কমিশনার ভোটে জালিয়াতি হয়েছে বলে স্বীকার করে নাটকীয়ভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ওই দিন তিনি বলেছিলেন, রাওয়ালপিন্ডিতে বড় ধরনের নির্বাচনী কারচুপির ঘটনায় বিবেকের তাড়না থেকে তিনি পদত্যাগ করছেন। তার এই ঘোষণা দেশটিতে রাজনৈতিক পারদ ব্যাপক বাড়িয়ে তুলেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিরল স্বীকারোক্তি দিয়ে নির্বাচন কমিশনার চাথার রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে নির্বাচনে কারচুপির দায়ভার গ্রহণ করেন। তিনি বলেছিলেন, আমরা ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত প্রার্থীদের বিজয়ীতে রূপান্তরিত করেছি।

তবে নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে বলে যে অভিযোগ করেছিলেন, তা প্রত্যাহার করে চাথা বলেছেন, ‘‘এ সবই ইমরান খানের প্রতিষ্ঠিত পিটিআইয়ের সাথে সমন্বয় করে করা হয়েছিল। পিটিআইয়ের নেতারা ভবিষ্যতে আমাকে লোভনীয় পদ দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।’’

বিবৃতিতে চাথা বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পিটিআই যখন পাঞ্জাবে সরকার গঠন করে, তখন তিনি পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সচিবসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ পদে ছিলেন। সচিব পদটি প্রাদেশিক সরকারের শীর্ষ পদগুলোর একটি। প্রাদেশিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় আমি পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছিলাম।

তিনি বলেন, পিটিআই ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি পিটিআইয়ের প্রখ্যাত নেতাদের একজনের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। চাথা বলেন, গত বছরের ৯ মের ঘটনার পর পিটিআইয়ের অন্যান্য নেতাদের মতো ওই নেতাও পলাতক ছিলেন, তাকে পলাতক অপরাধী (পিও) হিসেবে ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল।

‘‘আর পুরো সময়জুড়ে তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ ছিল আমার। আমি তাকে বিভিন্ন বিষয়ে সতর্কতার সাথে সাহায্য করেছি। ফল হিসেবে পিটিআইয়ের বিশিষ্ট ওই নেতার সাথে আমার সম্পর্ক উচ্চ-স্তরের বিশ্বাসের ভিত্তিতে খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে।’’

চাথা বলেন, ‘‘পিটিআই নেতা তাকে বলেছিলেন, পুরো পরিকল্পনাটি দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের পরামর্শ এবং অনুমতিতে সাজানো হয়েছে। আমি চাকরি থেকে অবসর নিতে যাচ্ছি এই বিষয়টি বিবেচনা করে উল্লিখিত ব্যক্তি প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন। আমার অবসর ঘিরে যে চাপের মধ্যে ছিলাম সে বিষয়েও তিনি অবগত ছিলেন।’’

‘‘পিটিআইয়ের ওই নেতা আমাকে প্রধান বিচারপতির নাম বিশেষভাবে বলতে বলেছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতৃত্ব তাকে বিশেষভাবে এটা করতে বলেছে। প্রধান বিচারপতির নামে অভিযোগ তোলার পেছনে নানাবিধ উদ্দেশ্য ছিল।’’

তিনি বলেন, একইভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজাকেও পুরো পাকিস্তানজুড়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার লক্ষ্যে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চাথা বলেন, তিনি ১৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছিলেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওই দিন কারচুপির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল পিটিআই।

‘‘শেষ পর্যন্ত, সংবাদ সম্মেলনে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, রাষ্ট্রবিরোধী এবং বিদ্বেষপূর্ণ বিবৃতি দেওয়ার জন্য আমি অত্যন্ত লজ্জিত ও বিব্রত বোধ করছি। এই কর্মকাণ্ড আমার পাশাপাশি পুরো প্রশাসনের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে,’’ যোগ করেন তিনি।

এদিকে, দুই সপ্তাহের দর-কষাকষির পর পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। সমঝোতা অনুযায়ী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ শরিফ এবং প্রেসিডেন্ট পদে আসিফ আলী জারদারি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিএমএল-এন ৭৯টি আসন নিয়ে জাতীয় পরিষদের বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আর পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। অন্য আরও চারটি দলকে সঙ্গে নিয়ে ৩৩৬ আসনের জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে পিএমএল-এন ও পিপিপি। যদিও নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

২৪ কোটিরও বেশি মানুষের এই দেশটিতে সরকার গঠন নিয়ে শুরু হওয়া টানাপোড়েন ঘিরে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন্থর গতির প্রবৃদ্ধি আর রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান জঙ্গি হামলার মাঝে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ও কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দেশটিতে স্থিতিশীল প্রশাসন দরকার।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট