পঞ্চম দফা অবরোধ শেষে দুদিনের হরতাল কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো। অবরোধের ন্যায় হরতালের মধ্যেও আতঙ্ক আর যাত্রী সংকটের কারণে চলছে না দূরপাল্লার বাস। রাজধানীতে গণপরিবহন চললেও সংখ্যায় কম। অফিস খোলা থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অফিসগামী যাত্রীদের।
টেকনিক্যাল মোড়ে কথা হয় উত্তরাগামী যাত্রী আফজালের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাভার থেকে ছেড়ে আসা বাস থেকে টেকনিক্যালে নেমেছি। উত্তরা যাওয়ার মতো সরাসরি কোনো বাস পাচ্ছি না এখানে। অপেক্ষা করছি।
অনেকক্ষণ পর একটি মোটরসাইকেলে ওঠেন সোহরাব আলী নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, অফিস বন্ধ থাকলে না ঠিক ছিল। হরতালে অফিস খোলা। গুলশান যাওয়ার মতো কোনো বাসের দেখা পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে রাইডে মোটরসাইকেলে ওঠা। আমার মতোই দশা অন্য সাধারণ যাত্রীদের।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ও একদফা দাবি আদায়ে দেশব্যাপী রোববার সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।
রাত থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে পিকেটিং, বাসসহ পরিবহন পোড়ানোর মতো ঘটনা। যার প্রভাবে খা খা করছে গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল।
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বেশিরভাগ কাউন্টারই খোলা। কিন্তু টিকিট বেচাবিক্রি নেই। কাউন্টারে নেই যাত্রী। হাঁকডাক নেই কাউন্টারগুলোতে। অনেক বাস কাউন্টার দেখা গেছে বন্ধ।
কমফোর্ট লাইন (প্রা.) লিমিটেডের কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ সুমন বলেন, যাত্রী না থাকার কারণে আমরা বাস ছাড়তে পারছি না। আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিদিন বাসের স্টাফ, চালকদের বেতন দেওয়া লাগে।
পূর্বাসা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, আজকে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রী বাস কাউন্টারে দেখা যায়নি। যাত্রী হলে আমরা অবশ্যই বাস ছাড়বো।
সূর্যমুখী পরিবহনের ম্যানেজার সারওয়ার হোসেন বলেন, সকাল থেকে বসে আছি। যাত্রীর দেখা নেই। একটি বাস ছাড়তে হলে অন্তত ১৫/২০ জন যাত্রী লাগে। অবরোধ-হরতালে ক্ষতিটা বেশি পরিবহন শ্রমিকদের।
নেত্রকোণা যাওয়ার উদ্দেশ্যে কাউন্টারে আসা হাবিব রহমান নামে এক যাত্রী বলেন, ঢাকায় থাকি, বাড়িতে পরিবার। বউ অসুস্থতার খবর পেয়ে গাবতলীতে আসি। জানি হরতাল। তবুও যদি যায় কোনো বাস। এই আশা নিয়ে আসছিলাম কাউন্টারে। বাস থাকলেও যাচ্ছে না।
Leave a Reply