লাল-সবুজের প্রতিনিধি হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ ওয়ানডে বিশ্বকাপের লড়াইয়ে নামছে সাকিব আল হাসানের দল। একইভাবে গৌরবের ঝাণ্ডা ওড়াবেন প্রথমবারের মতো আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। সদস্য দেশগুলো থেকে আইসিসি বিশ্বকাপ পরিচালনার জন্য ২০ জন আম্পায়ারকে বেছে নিয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন ১৩ বছরের অভিজ্ঞ এই ম্যাচ পরিচালক। এ নিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভারতে পাড়ি দেওয়া আম্পায়ার সৈকত নিজের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন।
প্রশ্ন : প্রথমবার বিশ্বকাপের মঞ্চে দায়িত্ব পেয়েছেন, কেমন লাগছে?
সৈকত : অবশ্যই ভালো লাগছে। ভালো লাগার মতোই একটা বিষয়। দেশের প্রথম কোনো আম্পায়ার হিসেবে যেহেতু সুযোগ পেয়েছি, ভালো লাগারই তো কথা। আশা করি ভবিষ্যতে আরও কেউ যাবে, এর দ্বারা সুযোগ উন্মোচন হয়েছে অন্যদের। ওয়ানডে বিশ্বকাপে আমাদের দেশ থেকে কেউ যাচ্ছে, এটা চিন্তা করেই ভালো লাগছে। একটা শুরু তো হলো, সঙ্গে চ্যালেঞ্জও থাকছে।
প্রশ্ন : এবার কি আশা করেছিলেন বিশ্বকাপের মঞ্চে সুযোগ পাবেন?
সৈকত : আমি আরও দুয়েক বিশ্বকাপ আগেই আশা করেছিলাম। তবে কোনো কারণে হয়তো হয়নি। শেষ কয়েক বছর বিশ্বব্যাপী হওয়া টুর্নামেন্টগুলোতে যেমন এগিয়েছি, সে হিসেবে আশা করেছিলাম যে সুযোগ পাবো। সে কারণে এই বিশ্বকাপে যাওয়াটা অপ্রত্যাশিত ছিল না।
প্রশ্ন : অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি?
সৈকত : চ্যালেঞ্জ তো অনেক। মাঠে একটা ম্যাচ পরিচালনা করা স্বাভাবিকভাবেই কঠিন। যেহেতু বিশ্বকাপ মাঠ অনেক, আলাদা দল। সবমিলিয়ে চাপ তো আছে, চ্যালেঞ্জও আছে। ১৩ বছরের যে অভিজ্ঞতা আছে, সেটা কাজে লাগাবো। যদিও এত বড় টুর্নামেন্টে দায়িত্ব পালনের অতীত অভিজ্ঞতা নেই।
বাংলাদেশ দলের প্রতি সৈকতের প্রত্যাশা, আমাদের দলের শক্তিমত্তা যা তার থেকে কিন্তু আমাদের চাহিদা বেশি। শেষ কয়েকটি বিশ্বকাপে আমরা কিন্তু দল হিসেবে খুব ভালো করতে পারিনি। এবারের বিশ্বকাপে আমরা সেমিফাইনাল খেলব এটা বলাও কিন্তু কঠিন। যে কারণে সত্যিকারের চাওয়া থাকলে হতাশা কম থাকে। আমাদের আরও উন্নতির জায়গা রয়েছে। আমি চাই বাংলাদেশ দল ভালো করুক।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ থেকে ভবিষ্যতে বিশ্বকাপে আপনার কোন সতীর্থকে দেখছেন?
সৈকত : আমার পরে যে কেউ হতে পারে। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে সেখানে ২৫ জন আম্পায়ার থাকবে। সংক্ষিপ্ত ক্রিকেটের আসরটির জন্য কাছাকাছি সেখানে বা পরে কেউ থাকবে কিনা সেটা আইসিসি বলতে পারে, আমি এখনই বলতে পারছি না। তবে দুয়েকজন খুব ভালো করছে। আম্পায়ার ভালো হতে গেলে কিন্তু ইংলিশ কমিনিউকেশন ভালো থাকতে হবে, না হলে বিশ্বমঞ্চে নিজেকে মেলে ধরা কঠিন।
প্রশ্ন : ভারতের মাঠে দর্শকদের চাপ বেশি থাকে, এতে কেমন প্রেশার দেখেন?
সৈকত : পৃথিবীতে যত খেলা আছে, সব কিন্তু চোখে দেখতে হয়। একমাত্র ক্রিকেট যেখানে আম্পায়ারদের চোখে দেখতে হয়, পাশাপাশি কানেও শুনতে হয়। অন্য কোনো খেলায় কানে শুনতে হয় কিনা আমার জানা নেই। টেনিস বা আরচ্যারি যাই বলেন, সেসব খেলায় শোনার কাজ নেই। কিন্তু ক্রিকেটে ব্যাপারটা আছে, যে কারণে মাঠে দর্শকদের সামনে আম্পায়ারিং করতে হলে অনেক দিক খেয়াল রাখতে হয়। এশিয়ার মাঠে দর্শকদের চাপ বেশি থাকে। অন্যান্য দেশে কম থাকে একটু।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সুযোগ কেমন দেখছেন?
সৈকত : আমরা তো সবসময় প্রত্যাশা করি আমাদের দলটা ভালো করবে। আমাদের দেশের যে কেউ চাইবে ছেলেরা ভালো করুক। এশিয়া কাপে আমাদের একটা রিয়েলেটি চেক হলো অধিনায়ক যা বলেছে। আমাদের দলের শক্তিমত্তা যা তার থেকে কিন্তু আমাদের চাহিদা বেশি। শেষ কয়েকটি বিশ্বকাপে আমরা কিন্তু দল হিসেবে খুব ভালো করতে পারিনি। এবারের বিশ্বকাপে আমরা সেমিফাইনাল খেলব এটা বলাও কিন্তু কঠিন। যে কারণে সত্যিকারের চাওয়া থাকলে হতাশা কম থাকে। আমাদের আরও উন্নতির জায়গা রয়েছে। আমি চাই বাংলাদেশ দল ভালো করুক।
আইসিসি এলিট প্যানেল থেকে বিশ্বকাপের দায়িত্বে আছেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিস্টোফার গ্যাফানি, শ্রীলঙ্কার কুমার ধর্মসেনা, দক্ষিণ আফ্রিকার মারাইস ইরাসমাস, ইংল্যান্ডের মাইকেল গুহ, ভারতের নিতিন মেনন, অস্ট্রেলিয়ার পল রাইফেল, ইংল্যান্ডের রিচার্ড ইলিংওর্থ ও রিচার্ড কেটেলবোরো, অস্ট্রেলিয়ার রোড টাকার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোয়েল উইলসন, পাকিস্তানের আহসান রাজা ও দক্ষিণ আফ্রিকার আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক।
এলিট প্যানেলের বাইরে থেকেও আছেন ৪ আম্পায়ার। তারা হলেন- বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত, অস্ট্রেলিয়ার পল উইলসন, ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হোয়ার্ফ ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিস ব্রাউন। এছাড়া ম্যাচ রেফারি হিসেবে থাকবেন নিউজিল্যান্ডের জেফ ক্রো, জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি পাইক্রফট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের রিচি রিচার্ডসন ও ভারতের জাভাগাল শ্রীনাথ।
Leave a Reply