1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন

সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রায় আজ
৪ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা রাষ্ট্রপক্ষের

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৮১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

৩৫ বছর আগে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সগিরার স্বামীর করা মামলায় সন্ত্রাসী মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদকে আসামি করা হয়। সেই ঘটনায় করা মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঘোষণা করবেন ঢাকার বিশেষ  জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত। 

এ বিষয়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলি রফিকুল ইসলাম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। রায়ে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি।

জবানবন্দিতে নিহত সগিরা মোর্শেদের শ্বশুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী জানান, তিনি ইস্কাটনে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। আসামি মারুফ রেজা তার রোগী ছিলেন। সে শহরে মাস্তানি করত। সগিরা মোর্শেদকে শায়েস্তা করার জন্য তিনি তাকেই ঠিক করেন। তার সাথে ২৫ হাজার টাকায় চুক্তি হয় এ কাজের জন্য। কিন্তু মারুফ রেজা সগিরা মোর্শেদকে চিনতেন না। এ জন্য হাসান আলী তার শ্যালককে দায়িত্ব দেন সগিরা মোর্শেদকে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য।

১৯৮৯ সালের ২৪ জুলাই সগিরা মোর্শেদের মেঝ বোন আমেরিকা থেকে ঢাকায় আসেন। এজন্য সগিরা মোর্শেদ ও আব্দুস সালাম তাদের রাজারবাগের বাসায় অনুষ্ঠানে সগিরা মোর্শেদের ভাই ডা.গওজ নেওয়াজ অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। গওজ নেওয়াজকে খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য সগিরা মোর্শেদ ২৫ জুলাই বড় মেয়েকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে নামিয়ে দিয়ে মেঝ মেয়ে ও ছোট মেয়েকে নিয়ে ধানমন্ডি বাবার বাসায় যান। বিকেল ৪টার দিকে সগিরা মোর্শেদ বাবার বাসা থেকে রাজারবাগে স্বামীর বাসায় ফিরে আসেন।

ঘটনার সময় সগিরা মোর্শেদের বড় মেয়ে সিদ্ধেশ্বরী ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ডে শিফটে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। তার স্কুল ছিল দুপুর সোয়া একটা থেকে। মা বড় মেয়েকে নিয়মিত রিকশায় স্কুলে আনা নেওয়া করতেন। বিষয়টি ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী শাহিন এবং শ্যালক আনাস মাহমুদ জানতেন। ২৫ জুলাই হাসান আলী চৌধুরী দুপুর দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে আনাসকে মৌচাকে গিয়ে মারুফ রেজাকে যেন সগিরা মোর্শেদকে চিনিয়ে দেয়। হাসান আলী চৌধুরীর কাছ থেকে বিস্তারিত টেলিফোনে জেনে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে বাসে, পরে টেম্পোতে করে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মৌচাক পৌঁছান।

মারুফ রেজা তাৎক্ষণিকভাবে মোটর সাইকেলে রিকশা কিছুক্ষণ ফলো করে। পরবর্তীতে রিকশার সামনে গিয়ে মোটরসাইকেল দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড় করে তারা দুজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে পড়ে। মারুফ রেজা সগিরা মোর্শেদের হাতের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন টানা হেঁচড়া করতে থাকেন। সগিরা মোর্শেদ চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। এ সময় মারুফ রেজা তাকে থ্রেট করে। সগিরা মোর্শেদ ওই সময় আনাস মাহমুদকে চিনে ফেলে। বলে,‘তুমি তো রেজওয়ান, তোমাকে আমি চিনি। তুমি এখানে কেন।’এই কথা বলার পরপরই মারুফ রেজা কোমরে থাকা রিভলবার বের করে এক রাউন্ড গুলি করে। প্রথম গুলিটি সগিরা মোর্শেদের ডান হাতের কনুইয়ের নিচে লাগে। আনাস মারুফ রেজাকে গুলি করতে নিবৃত্ত না করলে মারুফ আরেক রাউন্ড গুলি করে। দ্বিতীয় গুলি সগিরা মোর্শেদের বুক ভেদ করে সোজাসুজি পিঠ দিয়ে বের হয়ে রিকশার হুড ছিদ্র হয়ে যায়। সগিরা মোর্শেদের বুকে গুলি লাগার সাথে সাথে রিকশা থেকে পড়ে যান।

আনাস মাহমুদ আদালতে জবানবন্দিতে যা বলেন

সগিরা মোর্শেদের বুকে গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে তিনি রিকশার বাঁ দিকে হেলে পড়েন। তার পুরো শরীরসহ রিকশা রক্তাক্ত হয়ে পড়ে। সগিরা মোর্শেদকে দ্বিতীয় গুলি করার পর আনাস মাহমুদ মারুফ রেজাকে বলেন, চলো পালাই। তারা সগিরা মোর্শেদের ব্যাগও ফেলে দেয়। সগিরা মোর্শেদের হাতে স্বর্ণের বালা থেকে যায়। ভীতি ছড়ানোর জন্য মারুফ রেজা তাৎক্ষণিক উপরের দিকে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর তারা সেখান থেকে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের সামনে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সগিরা মোর্শেদকে বহনকারী রিকশাচালক ছালাম মোল্লা একটি ইট হাতে হাইজ্যাকার বলে চিৎকার করতে করতে ধাওয়া করে।

শান্তিনগরের কাছে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের সামনে আনাস মাহমুদকে মারুফ রেজা মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে দেন। এদিকে রিকশাচালক ফিরে এসে দেখেন সগিরা মোর্শেদ নেই। রিকশায় রক্ত দেখতে পান। পরে তিনি রমনা থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সগিরার স্বামীর করা মামলায় মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদকে আসামি করা হয়। ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অপছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। সম্বোধন করা নিয়েও ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সগিরার কাজের মেয়েকে মারধর করেন আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এ নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শাহীন। আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে আসা অন্য আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন। চুক্তিকৃত ২৫ হাজার টাকার মধ্যে হাসান আলী মারুফ রেজাকে ১৫ হাজার টাকা দেন। ১০ হাজার টাকা পরে দেওয়ার কথা বললেও তিনি আর তাকে সেই টাকা দেননি।

মামলার আসামিরা হলেন, নিহতের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজা। গ্রেপ্তার হওয়া চারজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট