দীর্ঘ ১৩ বছর পর রাজশাহীতে ফিরছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। রাজশাহীর শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশের যুবারা। দুটি দলের মধ্যে তিনটি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী ১১ মে থেকে শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে মাঠে এই ম্যাচগুলো গড়াবে। তাই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্নের লক্ষ্যে কাজ করছেন সংশ্লিস্টরা।
দীর্ঘদিন পর হলেও রাজশাহীতে অন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হতে যাওয়ায় রাজশাহীর ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে এক ধরনের উৎসাহ কাজ করছে। তারা বলছেন, এই ধনের ম্যাচগুলো হলে স্থানীয় খেলোয়াড়রা উজ্জীবিত হবে।
জানা গেছে, রাজশাহীর শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াম উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় ক্রিকেট ভেন্যু। কিন্তু উন্নতমানের অবসান ব্যবস্থা গড়ে না উঠায় দীর্ঘদিন ধরে মাঠে গড়ায়নি কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। তবে যোগাযোগ ও আবাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন হওয়ায় জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানের নামকরণে এই বিভাগীয় স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরে আগামী ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামে আসবে পাকিস্তান যুব দল। এই সফরে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে একটি আনঅফিসিয়াল টেস্ট, পাঁচটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলটি সরাসরি ঢাকায় এসে পরে চট্টগ্রামে যাবে। সফরের একমাত্র টেস্ট ও প্রথম দুটি ওয়ানডে ম্যাচ হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। বাকি তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ ও একমাত্র টি-টোয়েন্টির ভেন্যু রাজশাহীর শহিদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়াম।
দীর্ঘদিন রাজশাহীতে কোনো অন্তার্জাতিক ম্যাচ হয়নি। রাজশাহীতে অনূর্ধ্ব-১৮, ১৯ দলের খেলাগুলো হলে খুবই ভালো হবে। স্থানীয় খেলোয়াড়ারা আরো উজ্জীবিত হবে। একই সঙ্গে বিদেশে রাজশাহী প্রমোট হবে।
চট্টগ্রামে পা রেখে চারদিন অনুশীলনের সুযোগ পাবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। এরপর ৩০ এপ্রিল চার দিনের ম্যাচে খেলবে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। একই ভেন্যুতে ৬ ও ৮ মে প্রথম দুটি ওয়ানডে হবে। রাজশাহীতে শেষ তিনটি ওয়ানডে হবে ১১, ১৩ ও ১৫ মে। একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ১৭ মে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) রাজশাহী ভেন্যু ম্যানেজার আরেফিন ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজশাহীতে দীর্ঘ ১৩ বছর পর কোনো আন্তর্জাতিক খেলা অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা গত ৬ মাস থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাজশাহীতে তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচগুলো সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে আগে হোটেলের সমস্যা ছিল। সেই সমস্যাগুলো তেমন নেই। এছাড়া সড়কে যানজট নেই। দিনে বিমান কয়েকবার যাওয়া-আসা করে। সব মিলিয়ে রাজশাহী সুন্দর নগরী। বিসিবি চাচ্ছে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো রাজশাহীতে নিতে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, দীর্ঘদিন রাজশাহীতে কোনো অন্তার্জাতিক ম্যাচ হয়নি। রাজশাহীতে অনূর্ধ্ব-১৮, ১৯ দলের খেলাগুলো হলে খুবই ভালো হবে। স্থানীয় খেলোয়াড়ারা আরো উজ্জীবিত হবে। একই সঙ্গে বিদেশে রাজশাহী প্রমোট হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে নির্মিত হয় শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াম। এর ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার। এই স্টেডিয়ামে ২০০৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের তিনটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ এবং ২০১০ সালের দক্ষিণ এশীয় গেমসের চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply