সুন্দরবনে গরু আনতে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছেন মো. ফজলু গাজী (৬২) নামে এক কৃষক। তাকে শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে স্বজনরা।
এর আগে মঙ্গলবার(৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের উত্তর রাজাপুর গ্রাম সংলগ্ন বনে গরু আনতে যেয়ে আক্রমণের শিকার হন তিনি। তার ডান পায়ে ক্ষত রয়েছে।
তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফজলু গাজী বলেন, বনের মধ্যে যেতেই গরু পাই।
পেছন দিয়ে হাক দিলে গরু বাড়ির দিকে রওনা দেয়। এর মধ্যে টের পাই, পেছন দিক থেকে কী যেন দৌড়ে আসতেছে। ফিরে বাঘ দেখে আমি চিৎকার শুরু করি। তখন সামনের খালে দুই নৌকায় থাকা ১০/১২ জনও চিৎকার শুরু করে। এরই মধ্যে বাঘে আমার একটা পা কামড়ে ধরে। তখন নৌকার লোকজন দৌড়ে আসলে বাঘ আমাকে ছেড়ে পালিয়ে যায়।
ফজলু গাজীর ছেলে মো. ফিরোজ গাজী বলেন, ঢাকায় ফেরি করে সবজি বিক্রি করি। গরু আনতে আমার বাবা বনে গিয়েছিল। কোন পাশ (বনে প্রবেশের অনুমতি) করা হয়নি। তাই ভয়ে আমরা কাউকে কিছু বলিনি। তাছাড়া টাকা-কড়ির জোগান না থাকায় স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছিলাম। সবশেষ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক ডাক্তার দেখালে তিনি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন।
আহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, আমাদের বাড়ির পরই ছোট একটু বেড়িবাঁধ, তারপর ছোট ভোলা নদী, তারপরে বন। আমাদের গরুটি ছাড়া পেয়ে শুকিয়ে যাওয়া নদী পেরিয়ে সুন্দরবনে ঢুকে পড়ে। ওই গরু আনতে ওপারের গিয়েছিলেন তার স্বামী।
বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, বাঘের কামড়ে আহত ফজলু গাজীর ডান পায়ের ক্ষত অনেক বেশি। সেখানে গভীর গর্ত হয়ে গেছে। পরিবারটি অনেক গরিব, চিকিৎসার ব্যয় মেটানো তাদের জন্য কঠিন। আমরা তাকে ভর্তি করে হাসপাতাল থেকে সব ধরনের সেবা দিচ্ছি। আজ (১১ ফেব্রয়ারি) তার পায়ের ক্ষত স্থানে অস্ত্রপাচার করা হবে।
তবে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় বন বিভাগ। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই ও শরনখোলা রেঞ্জের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানা নেই।
Leave a Reply