বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এর নবম আসরের ফাইনালে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেট স্ট্রাইকাসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রানের সংগ্রহ পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। জবাবে কুমিল্লা ১৯.২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে। সিলেটকে হারিয়ে বিপিএলের চতুর্থ শিরোপা জিতে নেয় ইমরুল কায়েসরা। কুমিল্লার হয়ে লিটন দাস ৩৯ বলে ৫৫ রান করে আউট হলেও জনসন চালর্স ৫২ বলে ৭৯ এবং মঈন আলী ১৭ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টসে জিতে সিলেটকে আগে ব্যাট করতে আমন্ত্রণ জানান কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ১৮ রান তোলেন সিলেটের দুই ওপেনার। তবে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে কোন রান না করেই সাজঘরে ফিরে যান তৌহিদ হৃদয়। ওয়ান ডাউনে নেমে দলের হাল ধরতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে তিনি ৪ বলে ১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। এরপর ক্রিজে এসে ওপেনার শান্তর সঙ্গে ৫৬ বলে ৭৯ রান জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম। ৩৮ বলে নিজের অর্ধশত পূরণ করেন শান্ত। এই আসরে এটি তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। এর আগে ৪৮ রান পূর্ণ করার পরেই বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলের এক আসরে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন শান্ত। ৫০০ থেকে ৪৮ রান দূরে থেকে ফাইনাল ম্যাচটি শুরু করেছিলেন তিনি। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৯ চার ও ১ ছয়ে ৪৫ বলে ৬৪ রান করে মঈন আলির বলে বোল্ড হয়ে থামে তার ইনিংস। পুরো আসরে ১৫ ইনিংসে ৩৯.৬৯ গড় ও ১১৬.৮৪ স্ট্রাইক রেটে তার রান ৫১৬।
দেশি-বিদেশি মিলিয়ে বিপিএলের এক আসরে শান্তর আগে ৫০০ স্পর্শ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশো। ২০১৯ আসরে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৩ ইনিংসে ৫৫৮ রান করেছিলেন তিনি। রুশোকে ছাড়ানো হাতছানিও ছিল শান্তর সামনে। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর পেরে ওঠেননি তিনি। বিপিএলে এক আসরে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় তিন নম্বরেও রুশোর নাম। ২০১৯-২০ আসরে খুলনা টাইগার্সের হয়ে ৪৯৫ রান করেছিলেন তিনি। ওই আসরেই ৭০.১৪ গড় ও ১৪৭ স্ট্রাইক রেটে মুশফিক করেন ৪৯১ রান। এত দিন ধরে এটিই ছিল এক আসরে বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। প্রথম আসরে ৪৮৬ রান করে তালিকার পাঁচে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদ।
শান্ত সাজঘরে ফিরলেও লড়াই চালিয়ে যান মুশফিক। মারমুখী হয়েও ১১ বলে ১৩ রান করেন রায়ান বার্ল। রানের খাতা খুলতে পারেননি থিসারা পেরেরা। শূন্য রানেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। জর্জ লিন্ডে ৯ রান করার পথে জীবন পেয়েছেন দুইবার। লিন্ডে ৬ বলে ৯, জাকির ৪ বলে ১ ও তানজিম শূন্য রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষ দিকে মুশফিকের অপরাজিত ৪৮ বলে ৭৪ রানের সুবাদে ১৭৬ রানের লক্ষ দাড় করায় সিলেট। কুমিল্লার হয়ে ৪ ওভারে ৩১ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। একটি করে উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল, তানভীর ইসলাম, সুনীল নারিন ও মঈন আলি।
এর আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফাইনালে মাঠে নেমেই অনন্য এক অর্জনে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছেন মাশরাফি। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে বিপিএলে ১০০তম ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ৯৯ ম্যাচে মাশরাফি ৬৪ ম্যাচ জিতেছেন। হেরেছেন ৩৫টিতে। সব মিলিয়ে এটি মাশরাফির ১০৫তম ম্যাচ। এর আগে পাঁচটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেননি তিনি। বিপিএলের আগের আট আসরে সর্বাধিক চারবার শিরোপা জিতেছেন মাশরাফি। ঢাকা গ্লাডিয়েটরসের হয়ে দুইবার, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রংপুর রাইডার্সের হয়ে একবার করে পেয়েছেন শিরোপা। এই তিন দলের বাইরে কেবল ঢাকা প্লাটুনের হয়ে খেলেছেন মাশরাফি।
Leave a Reply