একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশের উপর হামলা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে; এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন পুলিশসহ অন্তত ১৮ জন।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় চকরিয়া পৌরসভার লামার চিরিঙ্গা এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে বলে জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। এ হামলার জবাবে পুলিশ শুধু লাঠিপেটা করেছে, গুলি চালায়নি বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার।
ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ১৮ জন আহত হওয়ার তথ্য দিলেও তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ও আহতের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাকিল আহমেদ জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে।
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তির নাম ফোরকানুল ইসলাম (৬৫)। তিনি চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল ফজলের ছেলে।
ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ সুপার মাহফুজুল বলেন, বিকালে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাঈদীর গায়েবানা জানাজার বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় পুলিশ সেখানে জানাজার আয়োজনে বাধা দেয়। পরে সেখান থেকে সরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা চিরিঙ্গা এলাকায় জড়ো হয়ে জানাজার নামাজ পড়েন।
জানাজা শেষে অংশগ্রহণকারীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, এক পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল থেকে আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হতে থাকে। পুলিশ হামলাকারীদের থামাতে গেলে তাদের উপরও হামলা করা হয়। সরকারি যানবাহনও ভাঙচুর করা হয়। এসময় মুখোশধারী একদল লোককে গুলিবর্ষণ করতে দেখা যায়।
হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৮ জন আহত হন জানিয়ে তিনি বলেন, আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ছৈয়দ ইফতেখারুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যার আগে গুলিবিদ্ধসহ নানাভাবে আহত আটজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ এক বৃদ্ধের মৃত্যু হাসপাতালে নেওয়ার আগেই হয়েছে। অন্য আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চকরিয়ায় হামলার ঘটনায় পুলিশ লাঠিপেটা করলেও গুলি ছোড়েনি বলে দাবি পুলিশ সুপারের।
তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তি কীভাবে এবং কাদের গুলিতে মারা গেছেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। ঘটনার তদন্তের পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
চকরিয়ার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, সম্ভাব্য সংঘাত ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ এবং আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু হয়েছে।
Leave a Reply