ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটি শেষে গতকাল রোববার অফিস-আদালত খুলেছে। খুলেছে স্কুলকলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে সড়কে এখনো বাড়েনি যানবাহনের চাপ। সে কারণে সড়কে যানজটও নেই। তবে বিশৃঙ্খলা স্পষ্ট। মূল সড়কে হরহামেশা চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা।
খোদ ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশেই মূল সড়কে উল্টো পথে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও লেগুনা চলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। যার কারণে মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে গতি কমছে যানবাহনের।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর শেরে বাংলা নগর, আগারগাঁও ও শ্যামলী, শিশুমেলা এলাকায় সরেজমিনে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
ঢাকার ব্যস্ততম ট্রাফিক সিগন্যালগুলোর মধ্যে অন্যতম আগারগাঁও। সেখানে সরেজমিনে দেখা যায়, মূল সড়কের দুই পাশে পাল্লা দিয়ে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। হুটহাট উল্টোপথে ঢুকে পড়ছে অটোরিকশা। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের নির্বিকারভাবে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়।
আগারগাঁও মোড়ে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলে তো কোনো অনুমোদনই নেই। ধরলে মামলার প্রক্রিয়া নেই। সরাসরি ডাম্পিং করতে হবে। কিন্তু আপনি দেখেন, যে পরিমাণ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে তা সিগন্যাল পরিচালনা বাদ দিয়ে ধরতে গেলে মিনিটের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। যানজট, যান চলাচলে চাপ তৈরি হবে। যে কারণে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ধরার ক্ষেত্রে শিথিলতার কথা জানান তিনি।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) রোগী নিয়ে ঢোকার মুখে কথা হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখানে তো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার অঘোষিত স্ট্যান্ড বানানো হয়েছে। রোগী নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ঢুকতে ও বের হতে বাধার মুখে পড়তে হয়। চিল্লাচিল্লি করে অটোরিকশা সরিয়ে ঢুকতে ও বের হতে হয়। পাশেই ট্রাফিক পুলিশ বক্স। তাদের যেন কোনো বিকার নাই। লেগুনার দৌরাত্ম্য তো আছেই।
শ্যামলী শিশু মেলায় সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে আসা অভিভাবক মুনসুর আলী বলেন, এখানে কাছাকাছি কোনো ইউটার্ন আছে। তবুও উল্টোপথে চলছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা। পথচারীদের পারাপারে আছে সুউচ্চ ফুটওভার ব্রিজ। সেটি ব্যবহারকারীর সংখ্যাও অনেক বেশি। এই পথচারীরা নেমেই ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও শিশু মেলার মুখে বিড়ম্বনায় পড়েন। কারণ ফুটপাতজুড়ে দোকান আর রাস্তার অর্ধেকটা জুড়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার অবস্থান। হাঁটার জায়গা যেখানে নাই, সেখানে যান চলাচল তো গতি হারাবেই। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও লেগুনার দৌরাত্ম্য বন্ধে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ আশা করেন তিনি।
তবে কথা বলতে চাইতেই উল্টো পথে চলা অধিকাংশ অটোরিকশা চালককে দ্রুত সটকে পড়তে দেখা যায়। পুলিশের নাকের ডগাতেই এমন দৃশ্য নিয়মিত হলেও ব্যবস্থা নেই।
জানতে চাইলে ট্রাফিক তেজগাঁওয়ের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ এখন চ্যালেঞ্জিং হয়ে গেছে। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করি। উল্টোপথে চলা অটোরিকশা ও লেগুনা ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আমরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ট্রাফিক সচেতনতায় কাজ করছি। সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার কাজটা শুধু ট্রাফিক পুলিশের নয়, এটা সবারই দায়িত্ব।
Leave a Reply