দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পাঁচ বাহিনী ১১শ কোটি টাকার আবদার করেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে। তবে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হলে মোট চাহিদা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইসি।
ইসি জানায়, ফুয়েল, ভাতা, খাবার ইত্যাদি খাতে বাহিনীগুলো নির্বাচনি দায়িত্ব পালনের জন্য চাহিদা দেয়। সেই চাহিদা পর্যালোচনা করে বরাদ্দ দেয় কমিশন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলতে পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র্যাব, আনসার ও গ্রাম পুলিশ নিয়োগ দিয়ে থাকে ইসি। এছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী, গোয়েন্দা কার্যক্রমের জন্য ব্যয় হয় সংস্থাটির।
জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো এ পর্যন্ত এক হাজার ৭১ কোটি টাকা চেয়েছে। সবচেয়ে বেশি টাকা চেয়েছে পুলিশ। এই বাহিনী চাহিদা দিয়েছে ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আনসার বাহিনী চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। এছাড়া, বিজিবি ১৪৫ কোটি ৮৭ লাখ, র্যাব চেয়েছে ৫০ কোটি ৬৩ লাখ, কোস্টগার্ড ৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা চেয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হলে এই চাহিদার পরিমাণ আরো বাড়বে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৫৬৫ কোটি টাকা। সে সময় ৪০ হাজার ১৯৯টি ভোটকেন্দ্র ও দুই লাখ সাত হাজার ৩১৯টি ভোটকক্ষ ছিল। ভোটকেন্দ্র ও ভোটারদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত করা হয়েছিল বিভিন্ন বাহিনীর ছয় লাখ ৮ হাজার সদস্য।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র হচ্ছে ৪২ হাজার ১০৩টি। এক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন হবে। বাড়বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্য সংখ্যাও। তাই ব্যয়ও বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলো চাহিদা দিয়েছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে এটা পর্যালোচনা করে অনুমোদন দেবে কমিশন। সবচেয়ে বেশি চাহিদা পুলিশ ও আনসার থেকে এসেছে।
তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনের জন্য সব মিলিয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়, আর এক তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছে নির্বাচন পরিচালনার পেছনে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতা বাড়ছে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতাও বাড়ছে। আগে একদিনের ভাতা পেতেন। এবার দুদিনের পাবেন। এক্ষেত্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আট হাজার, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ছয় হাজার এবং পোলিং কর্মকর্তারা চার হাজার টাকা করে পাবেন।
চলতি সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনাররা। আর ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে সংসদ নির্বাচন।
Leave a Reply