‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এই স্লোগান নিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলে ভাষাশহীদদের স্মরণে জ্বালানো হয় লাখো মঙ্গল প্রদীপ ও মোমবাতি।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নড়াইল ‘একুশের আলো’ সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে ভাষাশহীদদের স্মরণে এ আয়োজন করে।
সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী মোমবাতি জ্বালিয়ে লাখো মঙ্গল প্রদীপ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন উদ্বোধন করেন।
শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে। সেই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৭৩তম বার্ষিকীতে ৭৩টি ফানুস ওড়ানো হয়।
সব কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে দুদিন ধরে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবী লাখো মোমবাতি দিয়ে সাজিয়ে তোলে পুরো মাঠ। বুধবার সন্ধ্যায় মোমবাতিগুলো প্রজ্জ্বলন করে আলোকিত করা হয় বিশাল মাঠ।
সন্ধ্যায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীদের ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এই গান পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলন শুরু হয়।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহা. মেহেদী হাসান, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ খান সাহাবুদ্দিন, পৌর মেয়র আনজুমান আরা, একুশের আলো, নড়াইল এর সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মলয় কুমার কুণ্ডু, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামসহ নড়াইলের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নড়াইলের ২৭ বছরের এই আয়োজন দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। জেলা একুশের আলো উদযাপন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক মলয় কুমার কুণ্ডু বাংলানিউজকে বলেন, বিগত ২৭ বছর ধরে আমরা এখানে ভাষা শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করছি। লাখো মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে আমরা কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামিসহ অন্ধকার থেকে মুক্ত হতে চাই, যা আমাদের ভাষাশহীদরা চেয়েছিলেন।
আয়োজকরা জানান, নড়াইল একুশ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে ভাষা শহীদদের স্মরণে ১৯৯৭ সালে নড়াইলে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন শুরু হয়। প্রথমবার ১০ হাজার মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাষাশহীদদের স্মরণ করা হলেও প্রতিবছর এর ব্যাপ্তি বেড়েছে।
Leave a Reply