গত সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) তালা ভেঙে রাজশাহীর শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার দখল আজ বৃহস্পতিবার সকালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-অভিভাবক ফোরাম এর ব্যানারে মানববন্ধন ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদাণ করা হয়।
শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজটি পরিচালনা করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন অধ্যক্ষ গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে আওয়ামীপ্রীতির অভিযোগ সামনে আসে। পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে ১৪ জুলাই অব্যাহতি প্রদাণ করে।
সোমবার সকালে ড. গোলাম মাওলা তার অনুসারী কিছু শিক্ষক ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে কলেজে যান। একটি কাগজ দেখিয়ে জানান, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অব্যাহতি দেওয়ার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। হাইকোর্ট অব্যাহতির আদেশ স্থগিত করেছেন। ফলে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ দাবি করেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে রাখে।
একপর্যায়ে ড. মাওলার অনুসারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা তালা ভেঙে তাকে ভেতরে ঢোকান এবং অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিয়ে দেন। দুপুরের পর পুলিশ যায়। তারা তালা ভেঙে ফেলার অভিযোগে কয়েকজনকে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। তখন পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে কাউকে আটক না করেই ফিরে যায় পুলিশ। রাতে এ নিয়ে মামলা করা হয়।
রাজপাড়া থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আয়নাল হক। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয় ১২ জনকে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি রয়েছেন আরও ৪০-৫০ জন। এ মামলায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশকে কিল-ঘুষি মারার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে তালা ভেঙে অফিসে প্রবেশ এবং ড্রয়ারে থাকা ৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা চুরি করার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম।
শফিকুল ইসলামের করা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ৯ জন। এ মামলাতেও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। দুটি মামলাতেই অব্যাহতি পাওয়া অধ্যক্ষ ড. গোলাম মাওলা, প্রতিষ্ঠানের সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক মামুনুর রহমান, যুক্তিবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক মকবুল হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজিজুন নেসা ও রসায়নের সহকারী অধ্যাপক মল্লিকা সমাদ্দারকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া মামলা দুটিতে ড. গোলাম মাওলার ছেলে ঐহিককেও আসামি করা হয়েছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-অভিভাবক ফোরাম স্মারকলিপিতে আওয়ামী ভন্ড সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎকারী অধ্যক্ষ ড. গোলাম মাওলা ও তার বহিরাগত সন্ত্রাসী সহযোগীদের আইনের আওতায় আনায়ন পূর্বক বিচারের মাধ্যমে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে তা হবে ২৪শের জুলাই গণঅভ্যূস্থানের শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানীর সামিল। তাই তাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী জানানো হয়।
Leave a Reply