1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০১ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিদেশী অ্যাপের ফাঁদে হাজারও মানুষ

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩
  • ২৭৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

রাজশাহীতে বিদেশী বিভিন্ন অ্যাপে কোটি টাকা বিনিয়োগ করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে টাকা বিনিয়োগ করে অ্যাপের ফাঁদে পড়েছে হাজারও মানুষ। রাজশাহী নগরী ও জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় মানুষকে বিভিন্ন অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করলে দ্রুত কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ও বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে হাজারও মানুষ কোটি টাকা বিভিন্ন অ্যাপে বিনিয়োগ করে কেউ হয়েছে প্রতারণার শিকার, আবার কেউ হয়েছে রাতারাতি কোটিপতি। তবে ওই সব বিভিন্ন অ্যাপের প্রচারকারিদের বিরুদ্ধে বা ওই সব অ্যাপ বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এ কারনে অফিস খুলে এসব বিদেশী অ্যাপে বিনিয়োগ করে দ্রুত অর্থ উপার্যন করা যাবে বলে প্রলোভন দিয়ে মানুষের মাঝে একটি চক্র প্রচার চালাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফেসবুক প্রোফাইলে নিউজ ফিডে বিভিন্ন অ্যাপের এ্যড দেখা যায়। এর মধ্যে রাজশাহীতে বর্তমানে জনপ্রিয়তার র্শীষে রয়েছে এমটিএফই নামের একটি অ্যাপ। এ অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করলে দ্রুত কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মানুষের কাছে প্রচার করছে কিছু যুবক। এমটিএফই এ অ্যাপের রাজশাহীতে অফিস নিয়ে বসেছে রাজশাহীর লক্ষিপুর রাজপাড়া থানা এলাকার রাজপাড়া মহল্লার সবুজ নামের এক যুবক। তার রয়েছে বিভিন্ন গ্রুপের কিছু বেকার যুবক। তাদেরকে দিয়ে সাধারণ মানুষকে অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন ও প্রলোভন দেখিয়ে হাজারও মানুষ ওই অ্যাপে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে। কোন বৈধতা নেই, কোন অনুমোদন নেই, এমন বিদেশী অ্যাপের নামে অফিস খুলে সেখান থেকে প্রচার করে মানুষকে অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করান তিনি। র্দীঘদিন যাবত এমন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে রাজপাড়া এলাকার সবুজসহ কিছু যুবক। এমন একাধিক গ্রুপ রয়েছে। প্রতিটি গ্রুপে শতাধিক মানুষ তাদের কথা মতো অ্যাপের ফাঁদে পা দিয়েছে। করেছেন লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ। এতে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। এসব অ্যাপের টাকা বিনিয়োগ করলে টাকা গুলি ডলারে রুপান্তর হচ্ছে। ডলার হিসাবে ওই সব অ্যাপে নিজের একাউন্টে জমা থাকছে প্রতিটি মানুষের। বিভিন্ন অ্যাপে ঝুকি নিয়ে কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট করছে রাজশাহীর হাজারো তরুন। রাতারাতি কোটিপতি হয়ে উঠার নেশায় এমটিএফই অ্যাপসহ বিভিন্ন অ্যাপে ঝুকি নিয়ে টাকা বিনিয়োগ করে এ্যাকাউন্ট খুলে দিচ্ছে বিভিন্ন অ্যাপের সাথে জড়িতো কিছু যুবক। অ্যাপের মধ্যে একাউন্ট চালু করার সময় ৫০০ ডলার সমপরিমান বাংলাদেশের টাকা বিনিয়োগ করতে হয় অ্যাপের প্রতিনিধীগনের মাধ্যমে। তার পরে সপ্তাহে লাভ বাবদ ২ হাজার হতে ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয় মর্মে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। উল্লেখিত লাভের আশায় রাজশাহীর হাজরো তরুন টাকা বিনিয়োগ করছে।

এমনকি সকল সম্পদ বন্ধক, বিক্রয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা লাভের আশায় অ্যাপের ডলার করে নিচ্ছে। সরকারের অনুমোদন না থাকলেও কবে কখন অ্যাপ গুলি বন্ধ হয়ে যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। বর্তমানে বিভিন্ন অ্যাপ গুলির মধ্যে এমটিএফই অত্যন্ত বিপদজনক ও ঝুঁকি পূর্ন হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে স্কুল কলেজের শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার নাগরিক বর্তমানে এমটিএফই অ্যাপে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে। অ্যাপের মাধেমে অনেকে আবার লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেও রয়েছে অতংঙ্কে, কখন বন্ধ হয়ে যায়। তবে এসব বিভিন্ন অ্যাপের প্রচারকারি যুবকরা একসময় দরিদ্র থাকলেও বর্তমানে হটাৎ কোটিপতি হয়ে গেছে। করেছেন বাড়ি গাড়ি। আর অর্থ বিনিয়োগ করে কেউ হয়েছে প্রতারণার শিকার। এমটিএফই অ্যাপের প্রচারকারি এক যুবকের নাম রুবেল। তার বাড়ি দূর্গাপুর। সে রাজশাহী আরডিএ মার্কেটে এক দোকানের কর্মচারি। সে রাজশাহীসহ দূর্গাপুরের শতাধিক মানুষকে এমটিএফই অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করিয়ে হটাৎ কোটিপতি হয়েছে। একসময় তিনি কাঠ মিস্ত্রী ছিলেন। তবে বর্তমানে তার বাড়ি গাড়ি সব হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এমটিএফই অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করা একাধিক যুবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কোন পরিচিত মানুষ ওই অ্যাপের প্রতিনিধি হয়ে তাদের কে প্রলোভন দিয়েছে, অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন ২ থেকে ৫ হাজার টাকা লাভ হবে ও পাওয়া যাবে। তার মাধ্যমে টাকা দিলে তাদের একটি একাউন্ট খুলে দেয়া হয়। পরে সারাদিনে ৩০ মিনিট ওই অ্যাপ খুলে বসে থাকতে হয়। সেখানে তাদের নিজ নিজ একাউন্টে কিছু পয়েন্ট ডলার হিসাবে জামা হয়। মাঝে মাঝে টাকাও তুলতে পারে তারা। আবার আতংঙ্কেও রয়েছে হটাৎ অ্যাপ বন্ধ হয়ে গেলে দায়ভার কে নিবে।

এমটিএফই অ্যাপে প্রচারকারি দূর্গাপুর উপজেলার রুবেল বলেন, আমার মাধ্যমে যদি কেউ অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করে তার কিছু কমিশন আমার একাউন্টে জামা হয়। বেশি টাকা বিনিয়োগ করলে বেশি কমিশন পাবো। এমন ভাবে যদি ১০০ জনকে বিনিয়োগ করতে পারি তাহলে আমি অফিস পাবো ও আমার পদ সিও হবে। এ ভাবেই হটাৎ কেউ লাখ লাখ টাকার মালিক হচ্ছে। তবে অ্যাপ বন্ধ হয়ে গেলে দায় ভার তারা নিবে না বলেও জানান তিনি।

রাজশাহীতে এমটিএফই অ্যাপের অফিস খুলে বসে প্রচারকারি নগরীর রাজপাড়া মহল্লার সবুজ সাংবাদিকদের বলেন, এমটিএফই অ্যাপের অফিস ও বলতে পারেন আবার আমার চেম্বারও বলতে পারেন। সারা বাংলাদেশে অ্যাপের প্রায় ৯ জন সিও রয়েছে। কাউকে জোর করে ওই অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করতে বলা হয়নি। তবে একজন বেকার যুবক যদি একটি কর্মপায় তাহলে আমাদের ভালো। তবে যে কোন সময় অ্যাপ বন্ধ হয়ে গেলে তার দায়ভার কে নিবে ও অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করে লাভ হবে মানুষের মাঝে এমন প্রচারের কোন অনুমোতি রয়েছে কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন অনুমতি নেই। অ্যাপ বন্ধ হয়ে গেলেও কেউ দায় ভার নেবে না বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, কিছু অ্যাপ বন্ধ হয়ে গেছে। এনিয়ে আমরাও বিভ্রান্তের মধ্যে পড়েছি। তবে এসব বিদেশী অ্যাপে মানুষকে টাকা বিনিয়োগ করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউকে জোর করে টাকা বিনিয়োগ করার জন্য বলছি না। এসময় তিনি এতো কথা ফোনে বলার সময় নেই বলে এ প্রতিবেদককে তার অফিসে চা খাওয়ার জন্য যেতে বলে ফোন কেটে দেন।

সাম্প্রতিক, রাজশাহীর দাশমাড়ি এলাকার সবুজ, লিটন, এখলাসসহ কিছু যুবক আলটিমা উইলেট নামের একটি অ্যাপে প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো বিনিয়োগ করে তার এলাকার মুনায়েম নামের এক বন্ধুর কথা মতো। দুই একবার ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পেয়েছে তারা। হটাৎ অ্যাপটি বন্ধ হয়ে যায়। এনিয়ে বোয়ালিয়া থানায় গত ২৬ জুন সবুজ আলী বাদি হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ রাজশাহীতে অভিযান চালিয়ে ওই অ্যাপের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে। এর আগেও রাজশাহীতে মুভি অ্যাপ নামের একটি অ্যাপে মানুষ কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়েছে। মুভি অ্যাপের রাজশাহীর নগরীর শিরোইলে অফিস খুলে বসে ছিলেন মানিক নামের এক যুবক। ওই অ্যাপে গোদাগাড়ীর প্রেমতলী এলাকার শতাধিক মানুষ টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয় হটাৎ অ্যাপ বন্ধ হয়ে গেলে। ওই ঘটনায় আরএমপি চন্দ্রীমা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে বেশকিছু আসামী গ্রেপ্তার হয়।

এ বিষয় আরএমপি পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, এসব অ্যাপের কোন দেশে অনুমোদন নেই। এসব অ্যাপের মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এসব বিষয় প্রতারণার শিকার হয়ে যদি কেউ অভিযোগ দেই তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে বিষয়টি আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে জানিয়ে দ্রুত এ বিষয় ব্যবস্থা গ্রহণ নেয়ার জন্য বলা হবে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট