বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গুগলিতে ব্যাটসম্যান যেমন কিছু বুঝে ওঠার আগে আউট হয়ে যায়, বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচিতে (২৮ ও ২৯ জুলাই) আওয়ামী লীগের একই অবস্থা হয়েছে। বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ বোল্ড আউট হয়ে গেছে।
সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি নেতাদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে মহাসচিব বলেন, আমাদের প্রবীণ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। আমানউল্লাহ আমানকে পিটিয়ে আটক করেছে। পরে চিত্রনাট্য সাজিয়েছে সরকার, গল্প তৈরি করেছে, ভিডিও করেছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক থাকে না, তারা এমন গল্প তৈরি করে। জনগণ তাদের গল্প খায়নি। এতে করে কি আমাদের নেতা গয়েশ্বর বাবু, আমানউল্লাহ আমান ছোট হয়ে গেছেন? হননি। ছোট হয়েছে তারা, যারা এ ধরনের নিকৃষ্ট নাটক সাজিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার এত ভীত যে একটা প্রোগ্রাম থেকে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে, গ্রেপ্তার করেছে, মামলা করেছে। আবার আমাদের নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করেছে। স্ত্রী-কন্যা-পুত্রদের ঘরে আটকে রেখে তল্লাশি করেছে। ১৫ বছর ধরে এসব করে আন্দোলন আটকানো যায়নি। এই মানুষের ঢল থামানো যাবে না। যতই গ্রেপ্তার করুক, থামানো যাবে না।
এই সরকারের দেশে-বিদেশে কোথাও সমর্থন নেই দাবি করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দুইবার দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে নির্বাচন ছাড়াই জোর করে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা নির্বাচন চাই। তবে হাসিনার অধীনে নয়। আমরা নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।
বিএনপি জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বাংলাদেশে সব দল মিলে একটা বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে, আর সেটি হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। এক দফা দাবি- এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
এর আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়নের সমালোচনা করেন এবং অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস তার বক্তব্যে বলেন, আজকে এই জনসমাবেশে যত লোক রয়েছে সবাইকে জেলখানায় পাঠালেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন বন্ধ হবে না। আওয়ামী লীগের গদি একদিন ভেঙে যাবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘চলমান আন্দোলনে কোনো কর্মীর মৃত্যু হলে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। মামলায় প্রধান আসামি করা হবে শেখ হাসিনাকে আর দ্বিতীয় আসামি করা হবে ওবায়দুল কাদেরকে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এক দফা এক দাবিতে রাজপথে নেমেছি। আপনারাও মাঠে নামুন, প্রয়োজনে রাস্তায় পড়ে মরে যাব। তবুও তারেক রহমানের বিজয় এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই ঘরে ফিরব। আমরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করি না।’
আমান বলেন, ‘আন্দোলনে ইতোমধ্যে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সারা দেশের নেতাকর্মীদের জেলে আবদ্ধ করা হয়েছে। তাদের আমরা মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ। আন্দোলন চলছে, আন্দোলন চলবে।’
Leave a Reply