তীব্র খরায় যেন পুড়ছে রাজশাহী। দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে বড় ধরনের বৃষ্টিপাত হয়নি। টানা বৃষ্টিহীনতা আর খরায় পুঠিয়া উপজেলায় আমের গুটি ব্যাপক হারে ঝরে পড়ছে। একদিকে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আমগাছে মুকুলও কম আসা, অন্যদিকে বৃষ্টির অভাবে গুটি ঝরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষি ও বাগান মালিকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুঠিয়ায় প্রায় ১ হাজার ৫৪৭ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৫৫০টি ছোট বড় আম বাগান রয়েছে। ফজলি, লখনা, গোপালভোগ, আশ্বিনা, হিমসাগর, দুধসরসহ প্রায় ১৫ এর অধিক জাতের আম চাষ করা হয়ে থাকে এ অঞ্চলে।
জানা যায়, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরসহ সকল ইউনিয়নের প্রায় প্রতি বাড়িতেই রয়েছে আমগাছ ও আম বাগান। এছাড়া উপজেলা জুড়ে আম বাগানে রয়েছে বিভিন্ন উন্নত জাতের আমগাছ। বর্তমানে এসব এলাকার আমগাছের নিচে দেখা যায় ঝরে পড়ে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট আমের গুটি।
বানেশ্বর এলাকার ছান্দাবাড়ী গ্রামের আমচাষি আব্দুল মমিন বলেন, ‘আমাদের গ্রামে অনেক ছোট বড় আমের বাগানে খরার কারণে আমের গুটি ঝরে পড়ছে। তারপর বৃষ্টির দেখা নেই। দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। বাগানের গাছে তিন ভাগের এক ভাগ আম ঝরে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আম নিয়ে বেকায়দায় রয়েছি আমরা বাগান মালিকরা।’
রঘুরামপুর গ্রামের আমচাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তীব্র খরার কারণে আমের গুটি অনেক ঝরে গেছে। ফলে অনেক গাছে কোনো আমই নাই। আমগাছে সেচ ও কীটনাশকের মিশ্রণ ম্প্রে করেও গুটি টেকানো যাচ্ছে না। এ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় আম নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। আমার অনেক বাগান কিনা রয়েছে যদি এমন ভাবে আম ঝরতে থাকে আর যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আমার অনেক টাকা লোকসান হবে।
ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী বলেন, খরার জন্য আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। তবে আমচাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি গাছের গোড়ায় পানি দেওয়াসহ ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার জন্য।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নিভাস সরকার জানান, আমাদের উপসহকারীরা আম রক্ষার্থে ১৫ দিন পরপর বাগান মালিক ও চাষিদের আমের গাছে বেশি করে পানি দিতে সব সময় পরামর্শ দিচ্ছে এবং ছত্রাকনাশক ও বোরন স্প্রে করতে বলা হচ্ছে। গত বছরে তুলনায় আমের গুটিও ভালো রয়েছে। কিন্তু তাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার করণে আমের গুটি ঝড়ে যাচ্ছে। তবে কিছু কিছু জাতের নিদিষ্ট কিছু বৈশিষ্ঠ রয়েছে যে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত আম ঝড়ানোর জন্য এক ধরণের হরমোন নিশ্বরণ করে থাকে ফলে গুটি ঝড়ে যায়। প্রাকৃতিক কোন বড় ধরণের দূর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।
Leave a Reply