শুষ্ক ও মলিনতা দূর করে বর্ষায় নবরূপে জেগে উঠেছে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি। আর মোহনীয় এই রূপ দেখতে বর্ষায় পর্যটকের ভিড় বাড়ে রাঙামাটিতে। কিন্তু কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনের জেরে দেশে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পর্যটকশূন্য রাঙামাটি। এতে লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরা।
অথচ বর্ষার এই সময়ে পাহাড়ের বর্ষার রূপ দেখতে প্রতিবছর ভিড় করে পর্যটকরা। বর্ষার এই মধ্য সময়ে দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় হঠাৎ মন্দাভাব পর্যটন ব্যবসায়। যারা এসেছিলেন তারাও আটকা পড়ে বিশেষ পাস নিয়ে রাঙামাটি ত্যাগ করেছেন। কবে স্বাভাবিক হবে তারও কোনো উত্তর নেই। অনেকটাই হতাশা নিয়ে দিন পার করছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
হোটেল মতিমহলের ব্যবস্থাপক চন্দন কুমার বর্মন বলেন, আমাদের হোটেলে এই মুহূর্তে কোনো গেস্ট নেই। পুরো হোটেল ফাঁকা। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাঙামাটিতে পর্যটক আসছে না। এই বর্ষা মৌসুমে আমাদের খুব ক্ষতি হয়ে গেল।
হোটেল স্কয়ার পার্কের ব্যবস্থাপক আকতার হোসেন বলেন, এই সময়ে আমাদের হোটেলে শতভাগ বুকিং থাকে, কিন্তু বর্তমানে পুরো হোটেল খালি। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কবে থেকে আবার পর্যটক আসা শুরু হবে কিছুই বুঝতে পারছি না।
রাঙামাটির স্থানীয়দের হাতে তৈরি বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা চলে পর্যটকদের উপর নির্ভর করে। পর্যটক না থাকায় সেই ব্যবসায়ও ভাটা পড়েছে। পর্যটক খরায় ভুগছে টেক্সটাইল মার্কেটের দোকানগুলো। বনানী টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপক সীমা চাকমা বলেন, আমাদের টেক্সটাইলের ব্যবসা পুরোটাই পর্যটক নির্ভর। পর্যটক না আসায় আমরা ব্যবসায়িকভাবে খুব ক্ষতির মুখে পড়েছি।
প্রতিদিনই পর্যটন কর্পোরেশনের ৫০ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে বলে জানালেন পর্যটন কর্পোরেশন রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা। তিনি বলেন, প্রতিদিন আমাদের গড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই পরিস্থিতি উন্নতি হলে আবারও পর্যটকমুখর হবে রাঙামাটি।
রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, রাঙামাটি পর্যটন নগরী হওয়াতে এখানকার বেশিরভাগ মানুষ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। পর্যটকের উপস্থিতির উপরই নির্ভর করে তাদের আয়। কিন্তু বর্তমানে রাঙামাটি পর্যটক শূন্য। এই উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে জেলার পর্যটন খাতে চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply