রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। শেষ মুহূর্তে পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে ছুটছে মানুষ। বুধবার (২৮ জুন) দিনভর ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে তীব্র যানজটে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের। তবে বিকেলের পর মহাসড়কে তেমন কোনো পরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। সন্ধ্যায় মহাসড়ক অনেকটা ফাঁকা দেখা গেছে।
বিকেলের পর মহাসড়কের রাবনা, রসুলপুর, পৌলি, এলেঙ্গা, হাতিয়া ও সল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তেমন কোনো পরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।
এর আগে ভোরে সেতুর ওপরে দুর্ঘটনা এবং গাড়ি বিকল হওয়ার কারণে দফায় দফায় টোল আদায় বন্ধ, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড় থেকে টাঙ্গাইলের বাঐখোলা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে যানজট। যানজটে পড়ে ঘরমুখো মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
উত্তরবঙ্গগামী গাড়ির যাত্রী মানসুরা চামেলী জানান, ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে ১২ ঘণ্টা সময় লেগেছে যানজটের কারণে। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে তিন ঘণ্টা লাগে।
শামিম নামে এক যাত্রী জানান, দুই ঘণ্টা লেগেছে শুধু বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে।
রংপুরগামী বাসের যাত্রী সাংবাদিক সাইফুজ্জামান সুমন জানান, তিনি ভোর ৫টায় ঢাকা থেকে গাড়িতে উঠে বিকেল ৪টায় সিরাজগঞ্জের ফুড ভিলেজে পৌঁছেছেন। বাকি পথ যেতে আরও ৫-৬ ঘণ্টার অপেক্ষা।
এদিকে ২৬ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ যানবাহন পারাপার হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ হাজার ৪৮৮টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৪০ হাজার ২০০ টাকা। ২০২১ সালের ১৩ মে ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৭৫৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। আর এতে টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ৯৯ লাখ ১৮ হাজার ২৪০ টাকা।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, সেতুর ওপর ও মহাসড়কে দুর্ঘটনার কারণে যানজট শুরু হয়। দুপুরের পর থেকে চাপ কমতে থাকে। বর্তমানে মহাসড়কে যানবাহন তেমন নেই।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ এখন নেই বললেই চলে। শেষ মুহূর্তের ঈদযাত্রায় ফাঁকা হতে শুরু হয়েছে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক। দিনশেষে মহাসড়কে খুবই সীমিত পরিমাণ যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
এর আগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ ছিল। মূলত গতকাল রাত থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ে যানজটে আটকে পড়া গাড়িগুলো ছেড়ে আসার পর সেতুর পশ্চিম পাড়ে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়।
বুধবার (২৮ জুন) বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের কড্ডার মোড় থেকে নলকা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে যানবাহনের সেই চাপ নেই, নেই আগেই সেই কোলাহল। মহাসড়কজুড়ে যেন একটা নিস্তব্ধতা কাজ করছে। শেষ মুহূর্তে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও তুলনায় খুবই কম। বেশিরভাগ সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকছে মহাসড়ক।
সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মহাসড়কে যানবাহন নেই বললেই চলে। সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে কড্ডার মোড় হয়ে মহাসড়ক একদমই ফাঁকা বলা যায়। মাঝে মাঝে দু-একটি যানবাহন চলাচল করছে। বেশিরভাগ সময়ই ফাঁকা থাকছে মহাসড়ক।
Leave a Reply