উত্তর জনপদে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশা আর হিম বাতাসে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তিস্তা-ঘাঘট, করতোয়া-যমুনেশ্বরী বিধৌত রংপুর জেলার প্রকৃতি মুড়ে আছে ঘন কুয়াশার চাদরে। হিমেল হাওয়া মাখা কনকনে ঠান্ডায় বেশিরভাগ শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তিতে।
তিন দিন ধরে কনকনে হিমেল হাওয়া বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে তাপমাত্রা। বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় শীত আর ঠান্ডার প্রকোপ বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ রকম মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই-তিনদিন স্থায়ী হতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
রংপুর নগরের শাপলা চত্বর, পায়রা চত্বর, বেতপট্টি মোড়, পার্কের মোড় ও টার্মিনাল এলাকায় শ্রমিকদের জটলা দেখা গেছে। খড়কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে এসব হতদরিদ্র মানুষ। শহর-গ্রামে রাস্তায় থাকা ছিন্নমূল অসহায় মানুষগুলোর কষ্ট বেড়ে গেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুর নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার দাপটে সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থলে যেতে বের হওয়া মানুষদের ঠিকই দেখা গেছে। সড়কে অটোরিকশা, চার্জার রিকশা, মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন কম চলাচল করতে দেখা গেছে। সড়কে দূরপাল্লার গাড়িগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতির কারণে বিমান ও ট্রেনের শিডিউল কিছুটা বিলম্ব হতে পারে বলে জানা গেছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীত আর ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে গেছে। জানুয়ারির শেষ দিকে আরও দুটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে শীতজনিত নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, পেটব্যথা, জন্ডিস, সর্দি-জ্বরে ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এ কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তরাঞ্চলের বহু মানুষ প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণে চেষ্টা করতে গিয়ে অনেকেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া শীতের সময়টাতে এমন রোগব্যাধী বাড়ে। আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শীত পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলায় সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগে শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply