রাজশাহীতে নানার পৈত্রিক জমি ফিরে পেতে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ১০ বছর যাবত কাগজের বান্ডেল নিয়ে ধরনা দিচেছন মোসাঃ লবেজান বেওয়া নামে এক বিধবা এক মহিলা।
উক্ত জমিটি হিন্দুর সঙ্গে মিথ্যা বিনিময় দলিল রেজিস্ট্রারি দেখিয়ে জমি দখলের পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মৃত জয়নাল ডাক্তারের ছেলে কুখ্যাত ভূমিদস্যু মোঃ ইসমাইল আমানুল্লা গং ও মোঃ মামুন গং এর বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানা এলাকায় ১নং-ওয়ার্ড সাইরগাছা গ্রামে মোসাঃ লবেজান বেওয়া তার নানার তফসিল ভুক্ত সম্পত্তি মৌজা- হড়গ্রাম জেএল- ৪৩ সিএস খতিয়ান- নং- ৬৪০। উক্ত খতিয়ানে রায়তি ছিলেন বাদীগণের নানা পোড়াই শেখ। উক্ত পোড়াই শেখ নালিশী সম্পত্তি ভোগ দখলে থাকা অবস্থায় এস এ, জরিপ কার্যকর সুরু হয়। এসএ জরিপে এসএ খতিয়ান- নং- ৮৩/১ খতিয়ানে নালিশী ‘ক” তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি যথারীতি পোড়াই শেখের নামে রেকর্ড ভুক্ত হয়। পোড়াই শেখ ভোগ দখল থাকা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে তার এক মাত্র মেয়ে মোসাঃ ফুদন বিবি উক্ত সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়। ফুদন বিবির বিয়ে হয় একই গ্রামের সোহারাব আলীর সঙ্গে। সোহারাব আলী মারা গেলে ফুদন বিবির দুই পুত্র হাকিম ও কাসেম ও দুই কন্যা শাহাজাদী ও লবেজান বিবি সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়ে ভোগ দখল থাকা অবস্থায় আর এস, রেকর্ড শুরু হয়।
ফুদন বিবির ছেলে ও মেয়ে ওই সময় নাবালোক থাকায় তারা জমির কাগজপত্র না বুঝায়, সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ভুমিদস্যু মোঃ ইসমাইল আমানুল্লা ও মোঃ মামুন হিন্দুর সঙ্গে তাদের জমির বিনিময় দেখিয়ে বিনিময় দলিলে মুসলমান পোড়াই শেখের জমি টুকু তুলে নেই বিনিময় দলিলে। যাহার সিএস,ও এসএ,দাগ ১৩৩০-ও ১৩৩১ দুই দাগে মোট ৮২ শতংশ জমি পুরোটাই ১৮৩৩৮ নং দলিলে ভুমি দস্যুদের নামে দলিলটি সম্পাদন করে পরবর্তীতে আর এস রেকর্ড টি ভুমি দস্যুদের দাদির নামে দেখানো হয়।
১৯৭২ সালের ১৮৩৩৮- নং বিনিময় দলিলটি তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতের মালদা থেকে আশা খদিজা খাতুন স্বামী আব্দুল গনি বাংলাদেশে রাজশাহী জেলার রায়পাড়া গ্রামের শ্রী কালিপদ শুকুলের সঙ্গে বিনিময় করেন শ্রী কালিপদ শুকুল। তিনি ৬৩৮ নং-খতিয়ানে মধ্যে শর্তভোগি মালিক ছিলেন। কিন্ত মুসলমান ৬৪০ খতিয়ানে মালিক ছিলেন পোড়াই শেখ। পার্শ্ববর্তি সাইরগাছা গ্রামের পোড়াই শেখের অজান্তে তার যায়গা-জমিগুলো কৗশলে বিনিময় দলিলে তুলে নিয়ে আর এস রেকর্ড টি খদিজার নামে দেখিয়ে খাদিজার ওয়ারিশদের নামে নাম জারি করে নেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে সিএস ৬৪০ খতিয়ান, এসএ ৮৩/১ দুই খতিয়ানের মালিক পোড়ই শেখের ওয়ারিশ মোসাঃ লবেজা বেওয়া ও অন্যন্য ওয়ারিশসহ-আর এস, রেকর্ড সংশোধনের জন্য যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে আর এস খতিয়ানের ওয়ারিশদেরকে বিবাদী করে-২০১৪ ইং তারিখে একটি অঃপ্রঃ মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং- ৩৬-২০১৪। উক্ত মামলাটি ৫ বছর সেখানে চলার পরে, পরবর্তীতে জেলা রাজশাহীর পুঠিয়া সহকারী জজ আদালতে স্থানান্তর হয়ে আসে। পুঠিয়া কোটে মামলাটির নাম্বার পরিবর্তন হয়ে আরেকটি ৪৯৭-২২-ইং নম্বর হয়। পুঠিয়া কোর্টের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ২০২৪ সালে মামলাটি যুক্তিতর্কের দিনধার্য হলে সেই ধার্য তারিখে বাদি ও বিবাদীর এ্যাডভকেট উপস্থিতিতে ৪ নং বাদী হাসান আলী ও ১নং- বিবাদী মোঃ ইসমাইল আমানুল্লার আলাদা আলাদা আদালত জবানবন্দি রেকর্ড করে। বিবাদী তার জবানবন্দিতে বলেন, আমার দাদি দাদা হিন্দুর সঙ্গে বিনিময় করেছে আমাদের সিএস খতিয়ান ৬৩৮। কিন্তু সেখানে প্রশ্ন উঠে সিএস, ৬৪০ খতিয়ানের মালিক আরেক জন সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ নাগরিক পোড়াই শেখ। পরবর্তীতে বাদী, বিবাদীর কাগজপত্র আদালত পর্যলোচনা করে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখ আদালত বাদীর পক্ষে রায় দেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, বিবাদী পক্ষের নামে খাজনা খারিজ থাকলেও এর কোন মূল্য নাই কারণ, ১৯-০৫-৭২ ইং তারিখের-১৮৩৩৮ নং বিনিময় দলিলটি বাদীগণের ওপর বাধ্যকর নয় বলে প্রমাণ হয় আদালতে। এই দলিল মূলেই বিবাদীগণের নামে এই নালিশী সম্পত্তি ভুলভাবে আর এস রেকর্ড হয়েছে। আর এই আর এস খতিয়ান বলেই বিবাদীগণের নামে খাজনা খারিজ হয়েছে সুতরাং এই খাজনা- খারিজের কোন মূল্য নাই, মর্মে এই মামলাটি সকল বিবাদীর বিরুদ্ধে দো-তরফা সূত্রে বিনা খরচায় ডিক্রি হয় এবং এই ‘খ” তফসিল সম্পত্তিতে বাদীগণের (ষোলআনা) সত্ত্ব আছে মর্মে ঘোষণা দেন, মোঃ আতিকুর রহমান সহকারী জজ পুঠিয়া রাজশাহী। বিবাদীরা মামলায় হেরে গিয়ে ভাড়াটিয়ে গুন্ডাদ্বারা পুনরায় ওই জমি দখল করার জন্য প্রতিদিন বাদীর সঙ্গে ঝামেলা করার চেষ্টা করছে এবং এলাকায় ত্রসের রাজত্ব কায়েম করছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা তাদের কেউ মামলাতে জড়ানোর হুমকি ধামকি দেয়।
এব্যপারে মৃত জয়নাল ডাক্তারের ছেলে কুখ্যাত ভূমিদস্যু মোঃ ইসমাইল আমানুল্লাহ ও মোঃ মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা এই প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে এই প্রতিবেদকসহ প্রত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সকলের চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে হুমকী দেয়।
Leave a Reply