অক্সিজেনের পাইপ নাকে লাগিয়ে অটোরিকশা চালানো রাজশাহীর সেই মাইনুরজ্জামান সেন্টু (৫৬) মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তিনি গেল ১৬ দিন ধরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দুপুরে ভাইয়ের বাড়িতে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
মাইনুরজ্জামান সেন্টুর মেয়ে আঁখি খাতুন জানিয়েছেন, তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। এছাড়া তার ফুসফুস নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
এজন্য তার বাবা জটিল শ্বাসকষ্টসহ বেশকিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
এরপর ভর্তির পর গত ১৬ দিন ধরে তার বাবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থ বাবাকে আঁখি হাসপাতাল থেকে তার চাচার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই তার বাবার মৃত্যু হয়। এরপর বাদ মাগরিব মহানগরের হেতেম খাঁ বড় মসজিদ প্রাঙ্গণে তার বাবার জানাজার নামাজ হয়। জানাজা শেষে হেতেম খাঁ কবরস্থানেই তার বাবার মরদেহ দাফন করা হয়।
অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালানোর খবর গত বছর প্রকাশের পর রাজশাহীসহ গোটা দেশের মানুষই তার করুন জীবনগাঁথা জানতে পারেন। এরপর ওই সময় চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান এবং সমাজসেবক ফারাজ করিম চৌধুরী রিকশাচালক সেন্টুর জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। তখন আরও অনেকেই তার চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন।
এছাড়া রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ রিকশাচালক সেন্টুকে রামেক হাসপাতালে দেখতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি সেন্টুর চিকিৎসাভার গ্রহণ করেন এবং জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সেন্টুর চিকিৎসার সব খরচ বহনও করা হয়। এখানেই শেষ নয়; ওই সময় গৃহহীন রিকশাচালক মাইনুরজ্জামান সেন্টু ও তার স্ত্রীকে বসবাসের জন্য নিজ নামে আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে একটি বাড়িও বরাদ্দ দেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ।
এরপর রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছিতে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের ওই বাড়িতেই স্ত্রী চম্পা বেগমকে নিয়ে বসবাস করতেন রিকশাচালক মাইনুরজ্জামান সেন্টু। তবে দীর্ঘ অসুস্থতার জের ধরে আবারও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার চিকিৎসা শেষে আর ফিরতে পারেননি।
Leave a Reply