1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০২:২৭ অপরাহ্ন

আলুর কেজি এক লাফে বাড়ল ১৫ টাকা

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ২৭৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

সবার ধারণা ছিল নির্বাচনের আগে নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি সরকার সহনীয় রাখবে। দ্রব্যমূল্যের ওপর লাগাম টানবে। ডিমের দাম কমানোর মধ্য দিয়ে সে ধরনের আলামতও লক্ষ করা গিয়েছিল। কিন্তু সিন্ডিকেট এত শক্তিশালী যে, ডিমের বাজারের ওপর কয়েকদিন নিয়ন্ত্রণ থাকলেও তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

আর অন্যান্য পণ্যের দাম কমানোর বিষয়ে কোনো ধরনের উদ্যোগের কথা শোনা যায়নি। এমন এক বাস্তবতায় অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরবরাহ ঠিক থাকলেও কারসাজি করে বাড়াচ্ছে সব পণ্যের দাম। গত সাত দিনের হিসাবও উলটে গেছে। হঠাৎ কেন আলু ও ডিমের দাম বাড়লÑএই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।

ঢাকার ক্রেতাকে প্রতিকেজি আলু কিনতে হয় ৭৫ টাকায়। সাত দিন আগে ছিল ৬০-৬৫ টাকা। ঢাকার বাইরেও প্রায় একই চিত্র। অন্যদিকে সরবরাহ ঠিক থাকলেও হালিপ্রতি (৪ পিস) ডিমের দাম বেড়েছে ৩-৫ টাকা। পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজ বাজারে এলেও ভারত রপ্তানি বন্ধের অজুহাতে পণ্যটি এখনো উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের প্রতারণার যেন আর শেষ নেই।

কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. শাকিল বলেন, বাজারে ফের আলু, ডিমের দাম বাড়ছে। যারা বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখবে তাদের ভূমিকা পর্যাপ্ত নয়। যে কারণে ফের বাড়তি দামে এই দুই পণ্য কিনতে হচ্ছে। পাশাপাশি বাজারে নতুন পেঁয়াজ এলেও এখনো বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায়। দেখারও যেন কেউ নেই।

এদিকে পর্যাপ্ত মজুতের পরও দেশে হিমাগার মালিকদের কারসাজিতে গত জুন থেকেই অস্থির আলুর বাজার। সে সময় প্রতিকেজি আলু খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। পরে তদারকি জোরদার করলে কেজি ৩৫ টাকায় নেমে আসে। তবে তদারকি শিথিল করা হলে আগস্ট শেষে ফের বাড়তে থাকে দাম।

আগস্টের শুরুতে কেজি ৪০ টাকা বিক্রি হলেও শেষে ৫০ টাকা বিক্রি হয়। সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৬৫ টাকায় বিক্রি হলে ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিকেজি খুচরা মূল্য ৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তারপরও দাম না কমলে অভিযান পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট না ভাঙতে পেরে আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। আমদানি করা আলু দেশে এলেও দাম কমে না। এছাড়া নতুন আলু বাজারে এলেও এখনো বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৭৫ টাকা।

নয়াবাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. হেলাল বলেন, হিমাগার থেকে ফের আলুর দাম বাড়ানো হচ্ছে। সে কারণে পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। ফলে বাড়তি দাম দিয়ে এনে বাড়তি দামে ক্রেতার কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে নতুন আলু বাজারে এসেছে। কিন্তু হিমাগার পর্যায়ে দাম বাড়ানোর কারণে ক্রেতা এখনো আলু কম দামে কিনতে পারছেন না।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু মনে করেন ৩৬-৩৭ টাকায় খুচরা বাজারে আলু বিক্রি সম্ভব। কিন্তু মজুতদারদের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজে খাবারের আলু যা ছিল তা দিয়ে ডিসেম্বর পুরো মাস চলবে। সেটাই হচ্ছে। সঙ্গে নতুন আলু বাজারে চলে এসেছে।

কিন্তু কোল্ড স্টোরেজে যারা আলু সংরক্ষণ করছেন, তারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। মাঠ থেকে নিয়ে পরিবহণ খরচ ও কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া মিলে এক কেজি আলুর খরচ পড়ে ১৮-২০ টাকা। সংরক্ষণকারীরা ৬-৭ টাকা লাভ করে আলু বিক্রি করলে কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি করতে পারত। সেটাই উচিত ছিল।

কিন্তু কোল্ডস্টোরেজে প্রতিকেজি আলু ৩৪-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এটা ২৭ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। আর বিভিন্ন হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকা বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। কারা দাম বাড়াচ্ছে তা সরকারও জানে। ব্যবস্থা নিলে মূল্য কমে আসবে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, সবকটি পণ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। যারা এসব নিয়ন্ত্রণ করবে তারা নির্বিকার। কোনো অপশক্তির কারণে সংস্থাগুলো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। তা না হলে অসাধুরা ভোক্তাকে ঠকাতেই থাকবে।

এদিকে জুলাই মাসে দাম স্থিতিশীল থাকলেও আগস্টে ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। তখন রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। আর পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ১৭০ টাকা। যা ১২০-১৩০ টাকা ছিল। এর আগে এক পিস ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১২ টাকা হওয়ার কথা থাকলেও ক্রেতাকে ১৪-১৫ টাকায় কিনতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিপিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করলেও তা কার্যকর হয় না।

পরে আমদানি করা হলে দাম কিছুটা কমে আসে। তারপরও বর্তমানে প্রতিপিস ডিম কিনতে বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। সোমবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৬ টাকা। যা এক মাস আগে ৪০-৪৩ টাকা ছিল।

ডিসেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণায় সেই অসাধু বিক্রেতারা বাড়াতে থাকে দাম। দুই দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ২৪০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। মাঠ থেকে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় কমতে থাকে দাম। তারপরও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরেই। সোমবার খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০ ও আমদানিকরা পেঁয়াজ ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দাম ৬৫ টাকা কেজি।

সোমবার বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তদারকি জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করছে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট